কানপুর এর সেই দু বছর।। 97-99



কানপুর এর সেই দু বছর।। 97-99

 এক কথায় বললে ' কিছু বলার নেই', আসলে এত বলার আছে যে কোন ভাবেই বলে বা লিখে শেষ করা যাবে না। চেষ্টা করাও তাই বৃথা। তবুও লিখছি কারণ এটাই একমাত্র মাধ্যম আমাদের পুরোনো দিনের সাথে নতুন করে যোগাযোগ রাখার। আমার বন্ধুরা আবার ফিরে যাবে আমার সাথেই সেই ফেলে আসা রাস্তায়, সেই আঙ্কেল জি র হোটেল এ, সেই রামু দার চায়ের দোকান এ, এরকম আরো আরো অনেক নাম ভুলে যাওয়া জায়গায়, স্মৃতি কে নূতন করে চাঙ্গা করে নিতে।
আমাদের এই দু বছর এর সময় কে আমি দুটো ঋতু তে ভাগ করে লিখবো। কারণ কানপুর ছিল আমাদের কাছে প্রচন্ড গরম আর প্রচন্ড শীত এর দিন। গরম এর সময় ইউনিভার্সিটি ( ডি এ ভি কলেজ) থেকে ফেরার সময় দুপুর এ রাস্তায় আমরা যখন ফিরতাম তখন কিছু কুকুর আর ক্লান্ত রিক্সাওয়ালা ছাড়া কিছুই থাকতো না। কোনো দোকান ই প্রায় খোলা থাকতো না। ফিরে এসে দুপুর টা কাটানো ছিল খুবই কষ্টের, কিন্তু অদভূতভাবেই বিকালগুলো ছিলো আমাদের কাছে 'মধুর', আর সন্ধ্যে পেরিয়ে রাত হতো স্বপ্নের মতো। ঠিক এই ভাবেই শীতকাল এ ফেরার সময় যেমন ভালো লাগতো, তেমনি সকাল এ যাওয়া ছিল খুবই কষ্টের। দু বার দুটো ষ্টল এ আদা চা খেয়ে আমরা হাঁটতাম।
আরো দুটো ভাগে এই সময় তাকে আমরা দেখতে পারি। আঙ্কেল জি র কাছে খাওয়া আর রাজু র রান্না খাওয়া। ( এই ভাগ টা যদিও আমি আর রাজীব ছাড়া বাকি দের জন্য নয়, কারণ দিব্য এর কথায় আঙ্কেল জি আমাদের যেটা খেতে দিতো সেটা 'ফ্যা_' ছাড়া আর কিছু নয়। যদিও আমি আর রাজীব সেটা খেয়ে পেটভরাবার সাথে সাথে মনভরাতে পাঁচ টাকার টকদই কিনে নিয়ে ঢুকতাম। আঙ্কেল জি র কাছে স্পেশাল ছিল কিন্তু বরাবর শান্তি দা, 'কি রে, মনে পড়ে, কেন?) আসলে আমি আর রাজীব ছিলাম একটু অলস প্রকৃতির, রাজুর কাছে খেলে রান্নার জোগাড় করতে হবে, বাজার করতে হবে বা থালা বাসন ধুতে হবে। তাই আমরা মাঝে মাঝে খেতাম আর মাঝে মাঝে সেই একমাত্র আঙ্কেল জি। আচ্ছা, সব থেকে কুঁড়ে দিব্য কি করতো? কি আবার? রাজু কে ম্যানেজ করে চালাতো। তবে এই রান্না নিয়ে যখন শুরু হলো তখন একটা কথা না বললে চলবে না, সেটা হলো রাজুর পিয়াঁজ পোস্ত। আ, আহা, মুখ ছেড়ে গেল মনে করে। এবার আর একটা কথা না বললে নয়, সেটা হলো আমায় অনুপম দার রান্না শেখানো। আমাদের টীম এর আমি আর অনুপম দার মধ্যে অনুপম দা রান্না করতো আর আমার কাজ ছিল বাসন ধুয়ে দেওয়া। একবার আমি সবার সাথে ঘুরতে গেছি বিকাল এ, বাসন আর কার মনে থাকে, তো অনুপম দা কে বাসন ধুয়ে রান্না করতে হয়েছে। রাত্রে সেই দেব বাণী গুলো শুনে আমি আবার আঙ্কেল জি র কাছে ফেরত গেলাম।
রামু দার চা: প্রতিদিন সকাল শুরু হতো এখানে চা, কচুরি, আবার চা আর দৈনিক জাগরণ এর খেলা আর সিনেমা র পাতা কাড়াকাড়ি দিয়ে। রামু দা কিন্তু চা টা মাংস র ঝোল এর মতোই বানাতো। রামুদা কিন্তু ভালো গুজিয়া বানাতো, যদিও আমায় একবার সিদ্ধি দেওয়া গুজিয়া খাইয়েছিল, না জানিয়ে। গোটা বিকাল ঘুরে আমি ফিরেছিলাম রাত্রে খাবার সময়। ঘুরছিলাম কোথায়? কেন? জায়গা তো ছিলো আমাদের দুটো।
স্বরূপনগর আর প্যারেড।
স্বরূপনগর!! ওহ, ওহহহ!! বুকে লাগলো যে বড়! গেলেই মন ভালো হয়ে যেত, আর না পাবার কষ্ট ও লাগতো তখন। পরে বুজেছি, সব কিছু পাবার জন্য নয়, কিছু দেখার ও।
আমরা এই দু বছর এ দুটো জায়গায় ছিলাম। প্রথম বছর ছিলাম 'ভার্গব' এ আর পরের বছর ছিলাম 'ফান্টু ভাইয়া' র বাড়ী তে। 'ভার্গব' এর দিন গুলো ছিল সোনায় মোড়া, এতটাই স্বর্ণখচিত ছিলো যে পরের বছর আমরা উৎখাত হলাম। একটু মন খারাপ হলেও পরে 'তেজা সিং কি হাতায়' ফান্টু ভাইয়ার বাড়িতে এসে মনে হলো, আরে, এই তো সেই জায়গা, এখানে না এলে কানপুর বাস সম্পূর্ণ হতো না।
যাই হোক 'ভার্গব' এর হোলি আর ফিস্ট গুলো ছিলো সবথেকে আনন্দের। শীতকালের দুপুরে তেল মেখে ছাদে বসা, মাঝরাত্রে উল্টো দিকের 'দেশী শরাব কি ঠেকা' তে মাতাল এর হুজ্জত, ঝাঁ চকচকে মার্বেল দেওয়া বাড়ীর নিচের তলায় গরুর গোয়াল, বস্তি র জল নেওয়া রাস্তার কল থেকে আর তারই মাঝে প্রাসাদপম বাড়ীতে সাইরেন বাজিয়ে সকাল বিকাল আসা যাওয়া করা প্রেমলতা কাটিহর (তৎকালীন মন্ত্রী, কিসের মন্ত্রী, জানি না) ম্যাডাম, বিশাল পুলিশ স্টেশন : গোয়ালটুলি ই হলো প্রকৃত কানপুর এর চিত্র। ভার্গব এর বাড়ী ছিল একেবারে মোড়ের মাথায়, আর তার দো-তোলার কোনের ঘর এ আমি, দিব্য, রাজু আর রাজীব। জানলার ধারে দিব্য, কোনের দিকে রাজু আর মাঝখানে আমার আর রাজীব এর তক্তা জোড়া লাগানো। বসা, আড্ডা, গল্প সবই হতো এই খানেই। কত কিছু যে মনে পড়ে যায় লিখতে লিখিতে। এক একটা ঘর যেন ছিল এক একটা জেলা, পশ্চিমবঙ্গের। পাশেই গৌরাঙ্গ, সায়নদা আর মানব দা ছিল মেদিনীপুর, তার পাশের ঘরে শুভাশীষ দা, বরুন দা আর শিবনাথ দা ছিল মালদা র, আর তার পরেই স্বার্থ দা, শান্তি দা, সুপূ দা, অনুপম দা রা ছিল মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান আর হুগলির মিলিত রূপ। আর বিকাশ দার ছিল সব ঘরে সমান অধিকার, নাম কা ওয়াস্তে অনুপম দার সাথে একটা ঘর ছিল যদিও। বহু ছোট ছোট স্মৃতি আজকে মাঝে মাঝে মনে পড়ে যায় - সায়ন দার একদান দাবা খেলতে বসার জোরাজুরি, মানব দার সিঁড়ি র চাতাল এ বসে পরীক্ষার আগে জোরে জোরে চিৎকার করে নোট মুখস্ত করা, অনুপম দার খাবার পর জোর কদম এ হাঁটা সাথে মৃদু সুরে গান, বরুনদা র ওর বাবার সাথে কথা কাটাকাটির গল্প, গৌরাঙ্গর কঙ্কাল বডি তে বারমুডা আর স্যান্ডো গেঞ্জি পরে মুখে বিড়ি নিয়ে 'কি করচু' বলা, রাজুর সকাল বেলায় উঠেই গামছা পরে নেওয়া, দিব্য র সকাল থেকে জানলা দিয়ে থুতু ফেলা আর সেই নিয়ে ভার্গব এর সাথে ঝগড়া, (আমার ও অনেক কিছু ছিল, সেগুলো দিব্য ভালো বলতে পারবে)- এই নিয়ে 'ভার্গব' ছিল এক বিচিত্র রঙ্গমঞ্চ। (জানি, কোনো গল্পই শেষ হবে না, আবেগও শেষ হবে না সব বলে দেবার, আর সব গুলিয়ে যাবে বলার চেষ্টায়।)
কানপুর এর সাত দিন এর হোলি, আর শেষ দিনের হোলির উৎসব আমার দেখা অনেক হোলি র মধ্যে অন্যতম। যদিও এই হোলি র ভালোবাসার অত্যাচার আমরা 'সনু' (ভার্গব এর ছেলে) র উপর যখন দেখলাম, তখনই আমাদের উৎখাত। এই 'ভার্গব' এ শীতকালে প্রায় একমাস আমি আর গৌরাঙ্গ কাটিয়েছিলাম, কেউ কোথাও ছিল না, সবাই স্টাডি লিভ এ বাড়ী এসেছিল, আর আমরা ভালো করে পড়ার জন্য থেকে গিয়েছিলাম।
পরের বছর ' ভার্গব' ছেড়ে ফান্টু ভাইয়ার বাড়িতে এসে এক নতুন কানপুর দেখলাম। গলি ('হাতা' সেই বিখ্যাত 'তেজা সিং কি হাতা', 'তেজা সিং' ছিলেন ফান্টু ভাইয়ার বাবা, গলির সব বাড়িগুলো ছিল ওনাদের, তাই ওনার নাম এ নাম) থেকে সেই বিখ্যাত সিঁড়ি পেরিয়ে দোতলায় আমাদের ঘর, আস্তে যেতে এক পাশে মনোজ, সুরজিৎ, সন্দীপ (স্যান্ডি, মিলিটারি বাবার ছেলে, দুন এ পড়াশোনা!, পূজা বাত্রা! র বন্ধু, আরো অনেক কিছু আছে স্যান্ডি র ডায়ালগ!!) দের ঘর আর অন্য দিক এ 'একজন' (নামটা 'সুমন' মনে হয়, রাজু জানে) এর বাড়ি পেরিয়ে আমরা উঠে যেতাম, আর তার উপরে ফান্টু ভাইয়ার ফ্যামিলি থাকলেও ছাদ এ ছিল আমাদের অবাধ যাতায়াত। বিনয়, এর সেই 'গুরুদেব' ডাক, সন্ধ্যায় তাসের আড্ডায় ঝগড়া সেরে উঠেই নাকে মুখে কোনো রকম এ খেয়ে জলের বোতল, বিড়ি সাজিয়ে পড়তে বসে 'আজ থাক, কাল থেকে শুরু করবো' ভেবে তাসের চাল নিয়ে ভাবতে ভাবতে পৌঁছে যেতাম এক অন্য দুনিয়ায়। পরীক্ষার আগের একমাস ছিল দেখার মতো: চারিদিকে ছড়িয়ে নোট আর বই, যে যেখানে পেরেছে বসেছে, সিঁড়ি, চাতাল, কলের পাশ, ছাদ কোথাও বাদ নেই, আর মাঝে মাঝেই চিৎকার, ' কই বে, হ্যামলেট টা একবার দে, সারাদিন ধরে এমন নিয়ে বসে আছিস যেন ওটা হ্যামলেট নয়, ওফিলিয়া র বিয়ের গল্প পড়ছিস'। 'দিচ্ছি, দিচ্ছি, আরে শালা, মেটা-ফিজিক্যাল পোয়েট গুলো কিন্তু যাই বলিস, হারামীর হাত বাক্স ছিলো', আমাদের সারা রুম জুড়ে তখন চলতো ইংরেজি সাহিত্যের 'মা-বোন এক করা', আমরা সবাই ছিলাম ইংরাজীর ছাত্র।
গোটা গোয়ালটুলি জুড়ে ছড়িয়ে আছে আমাদের দিনগুলো। স্বাতী দের 'পি এন বি' পেরিয়ে 'কাপুর এর দাওয়াখানা'(দেবেশ বলতো কাপুর সাত টাকা ভিজিট এ যা ওষুধ দেয় তাতে আঙ্কেল জি র একদিন এর মিল অফ করে দেওয়া যায়), মিঠু আর তানি দের দোতলার পাশে নবনীতা দি দের নিয়ে ওই 'নর্থ বেঙ্গল' ঘাঁটি, সামনে পান দোকান থেকে লখন দার ডাক, 'ভাইয়া, আপ কি কমলাপসন্দ এ গয়া' , আর একটু এগিয়ে সেই বিখ্যাত ফোন বুথ ( কারোর মোবাইল ছিলো না তখনও) ফেলে রেখে এক ধারে রামুদা, আঙ্কেল জি ফেলে রেখে 'সানডে মার্কেট'(এখানে স্বাতী একদিন এ চুড়িদার এর ছিট কিনে সঙ্গে সঙ্গেই বানিয়েছিল) এর রাস্তা ধরে এসে মোড়ের মাথায় একদিকে 'শুদ্ধ ভোজনালয়' ( আ, আহা, কি বানাতো মাইরি 'ডাল ফ্রেই', আর 'বেগন কি ভর্তা', আজো মুখে লেগে আছে, খেতাম আর দেখতাম মোটা মতো একটা লোক সাদা ধুতি আর গেঞ্জি পরে ক্যাশ গুনছে আর সাদাকালো টি ভি দেখে চলেছে। এখানে যদিও আমরা শুধু যেদিন বাড়ী থেকে ওখানে পৌছাতাম সেদিন দুপুরে খেতাম) আর একটু ভেতরের রাস্তার সামনে 'দ্বীপময়ূর' (স্বপ্নের দ্বীপময়ূর, যদিও পড়া শেষ হবার পর একবার যখন গিয়েছিলাম তখন ওখানেই ছিলাম, এমন কিছু ভালো লাগে নি)। এখানেই শেষ হতো গোয়ালটুলি। 'শিবালয়' বাজার ছিল আমাদের এক 'সব পেয়েছির জায়গা', বেল্ট, জুতো থেকে লখনৌ চিকন, কি না কিনেছি ওখানে।প্রদীপদার সাথে ওদের গ্রাম এর ছেলে যারা কানপুর এ কাজ করতো তাদের কাছে নিমন্ত্রণ এ গিয়ে রাত্রে আমার আর দিব্য র ফেরা, কাওকে স্টেশন এ বাড়ী র ট্রেন এ সী অফ করতে এসে তার ঝেড়ে কোল্ড ড্রিংকস খেয়ে ফেরা, প্যারেড এর মার্কেট এর পাশে ঘোরাঘুরি করা, হজরাথগঞ্জ এ ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস এ যাওয়া, 'গ্রিনপার্ক' এ সচিন সৌরভ এর অনবদ্য ব্যাটিং দেখা(সৌরভ এর তিনটে ছয় মাঠের বাইরে রাস্তায় পড়েছিল, সচিন সেঞ্চুরি করে অস্ট্রেলিয়া কে হেলায় হারিয়েছিল, আর আমি একটা টাইটান এর ঘড়ি কুড়িয়ে পেয়েছিলাম যদিও স্বাতী দেখিয়েছিল), বড় থালার মতো লুচি, দুধ, চা, সবই 'মালাই মারকে', জিলিপি, সিঙ্গারা সবই টক দই দিয়ে খাওয়া : এ সবই ছিলো আমাদের কানপুর কে আত্মস্থ করার প্রচেষ্টা। আজও কিছু খাদ্যাভ্যাস যা আমি ছাড়িনি। কিছু কিছু ঘটনা আজও মনে পরে: দিব্য র অনুপম দা কে গুরু ডাক, যা পরে গুরু র আতঙ্ক এর কারণ ছিল, বিকাশ দার গলায় গুলাম আলী আর জগজিৎ সিং এর গান (নবনীতা দি র গান ও শুনেছিলাম আবার ওদের ওখান থেকে বিকাশ দার না রান্না ও খেয়েছিলাম, হুঁ, হুঁ, বাবা, 'জার্মান' রান্না, আমার কানপুর এর মেয়ে রিচা শর্মা র কাছ থেকে নোটস এর খাতা নেওয়া, স্বাতী র হসপিটাল এ ভর্তি হওয়া, মাঝরাতে রাজুর বিছানায় খসখস আওয়াজ, তানি র পরীক্ষা র আগে হসপিটাল এ ভর্তি হওয়া, শাহরুখ খান এর 'দিল' দেখা, কানপুর শ্মশান এর পাশ থেকে এক টুকরো গঙ্গা দেখা, ভালো লেগে যাওয়া সেই গান, ' উনসে যব, যব ভি মুলাকাত হোগি, সারি সারি রাত বরসাত হোগি', রাজীব এর বুকে দিব্য র তেল রাখা, আমার বুক মালিশ!! করে দেওয়া, বাড়ী থেকে যাবার সময় স্টেশন থেকে 'কলেজে বিড়ি' র অনেক প্যাকেট কিনে নেওয়া, কনসেশন টিকিট এর পুরো বই টা ইউনিভার্সিটি অফিস থেকে তুলে আনা, সন্ধ্যা আসরে দিব্য র লুডো নিয়ে হাজির হওয়া, বাজি একটাই- হারলে রামুদার গুজিয়া আর চা(এই বারে বাড়ী আসার আগে পর্যন্ত ওকে টিফিন খরচ বের করতে হয় নি), রাজুর বাথরুমে বসে নোটস মুখস্ত করা আমাদের জ্বালায়....আরো, আরো, অনেক কিছু লিখে শেষ করা যাবে না।
বঙ্গ ভবন হয়ে জে. কে. টেম্পল ( এখানেই বিকাশ দা তানি আর মিঠুর সাথে পরিচয় করিয়েছিল, সাথে ছিল নবনীতা দি) ঘুরতে যাওয়া, স্বরূপনগর মাঠ এ ক্রিকেট খেলতে যাওয়া, ওই মাঠেই ক্রিকেট 'ওয়ার্ল্ড কাপ' (রেপ্লিকা নয়, সত্যি সত্যি, দুটো বড় পেপসি র বোতল কিনলে টিকিট ফ্রি, সাথে 'অনাইদা' দেখা, সবই ছিল আমাদের বিকাল এর কাজ। (মাঠে খেলতে যাওয়া নিয়ে রাজীব আর দিব্য র কথোপকথন তো আজো মনে পড়িয়ে দেয় সেই দিনগুলো, "ধুর বে, ওই তো খাস আঙ্কেল জির '_ _', এর পর খেলা মানে শরীর নষ্ট আর জামা কাপড়ে ধুলো লাগলে নিজেদেরই কাচতে হবে, তার থেকে 'চ, 'ডিউটি' টা সেরে আসি,...' "।
ফিরে যেতে মন যায়। মনে হয় এক নিঃশ্বাস এ ফিরে যাই সেই সময় এ। সেই 'লাল-ইমলী' র পাশের রাস্তা দিয়ে ফিরে আসছি দল বেঁধে, ছোট ছোট দল থেকে দল এ কথা ছুড়ে চলছে অনবরত ইয়ার্কি, ফাজলামো, কারোর পিছনে লাগা, মাঝে কোথাও দাঁড়িয়ে মিঠু র 'ঝেড়ে' ( অব্যশই ভালোবাসা সহ) কোল্ড ড্রিংকস আর চিপস : আমাদের কানপুর জীবন এর অর্ধেক জুড়েই তো এই 'সময়'।
[এবারের ছবিগুলো কানপুর জুড়ে। কিছু বিঠুর আর কিছু লখনৌ এর।
অনেক এর ছবি হয়তো আজ আর খুঁজে পাচ্ছি না, তাতে কি! অনেকের সাথে আজ হয়তো আমার আজ আর যোগাযোগ নেই, হয়তো এই লেখা দেখে আবার যোগাযোগ হতে পারে। এরকম অনেক অনেক আশা...অনেক না বলা কথা নিয়েই শেষ হোক এবারের কানপুর এর দিনগুলো।]
























Comments

Popular Posts