houseless, not homeless!!

houseless, not homeless!!

 'স্পেস' (space), এই একটা ছোট্ট শব্দ যা ভাবায় আমাদের সবাইকে। এর অর্থ আর তার প্রয়োগ, স্থান ও সময়ের সাথে সাথে পাল্টে যায়। তাই 'স্থান' বা 'জায়গা' বোঝাতে এর ব্যবহার হয় সমজাতীয়, আর ক্ষেত্র বিশেষে এর অন্য প্রয়োগ যা 'ব্যবধান' বা 'সময়ের অংশ' কে বোঝায়। আবার কি অদ্ভুত সমাপতন ঘটে যখন আমরা শুধু 'শুন্য' বলতে এই শব্দটিকে দুমড়েমুচড়ে প্রয়োগ করি। কিন্তু বেশ মজার যখন আমরা এই একটি শব্দ দিয়েই 'ঘর' বোঝাতে চাই। আসলে আমরা এক অদ্ভুত গোলকধাঁধায় নিজেদেরকে ফেলি শুধু এই একটি শব্দ নিয়ে। এর এক দীর্ঘ ইতিহাস আসলে আমাদের তাড়া করে বেড়ায়। একটু ফিরে দেখা যেতেই পারে কি ছিল সেদিনের আমাদের সেই ভাবনাগুলো।

"All the world’s a stage,
And all the men and women merely players.
They have their exits and their entrances,
And one man in his time plays many parts.."
[Shakespeare, As You Like It (II. vii. ll.139-43)]
কিন্তু, সেদিন যখন 'স্পেস' ভাবনায় 'স্থান'টিকে 'মৃত', 'স্থির', 'নিরপেক্ষ', 'অস্থাবর' হিসাবেই বিবেচনা করেছিলাম তার বিপরীতে 'সময়ের অংশ' ছিল অনেক 'ঐশ্বর্যমন্ডিত', 'কল্পতাময়', 'জীবন পরিপূর্ণ' ও 'দ্বান্দ্বিক'। এবার শেক্সপিয়রের 'স্পেস' থেকে একটু বেরিয়ে এসে যদি ফুকো (Michel Foucault)র 'স্পেস' এর সামনে দাঁড়াই তাহলে আমাদের এই উপলব্ধি হয় যে,
"যারা ইতিহাসকে বিবর্তন, জীবন্ত ধারাবাহিকতা, জৈব বিকাশ, চেতনার অগ্রগতি বা অস্তিত্বের প্রকল্পের পুরাতন স্কিমার সাথে ইতিহাসকে বিভ্রান্ত করেন তাদের জন্য স্থানিক পদগুলির ব্যবহার মনে হয় ইতিহাসবিরোধী একটি বাতাস রয়েছে। যদি কেউ জায়গার দিক থেকে কথা বলতে শুরু করে যার অর্থ একটি সময়ের প্রতিকূল ছিল।" (Foucault, Interview,1976)
'স্পেস' কে আর বেশি জটিল করে না ভেবে শুধু যদি একটি প্রাসঙ্গিক সত্তা বা শুধুমাত্র একটি ধারণা হিসাবেই ধরে নি, তাহলে তার বিভিন্নরূপের মাধুর্য্য উপভোগ্য হয়ে উঠবে। সময়ের সাথে সাথে এই 'স্পেস' এক অন্য মাত্রায় ধরা দেয় লেখকের কাছে। দিন বদলের সাথে সাথে 'স্পেস' হয়ে ওঠে এক চরিত্রের জটিল সাইকোলজি যার মনস্তাত্ত্বিক অবস্থান আমাদের অন্য ভাবে ভাবায়।
এরকমই এক 'স্পেস' এর সন্ধান করে চলেছে এক বয়স্ক মহিলা আর তার গল্পের পরিচালক। 'নোমাডল্যান্ড' ('Nomadland', 2021)এর গল্প শুধু একা কোন ব্যক্তির নয়, আমেরিকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা সেই মানুষগুলো যাদের কাছে 'স্পেস' কোন নির্দিষ্ট আকার বা ত্রিমাত্রিক কোন সংজ্ঞা বা অবস্থান নয়, বহুমাত্রিক এক মানসিক উপস্থিতি। আরো বড় করে ভাবলে এ শুধু আমেরিকা নয় সারা পৃথিবীর সেই মানুষদের গল্প যাদের কাছে এই 'স্পেস' এর উপস্থিতি তাদের জীবনজুড়ে, জীবনবোধের সাথে আর প্রতিদিনের বেঁচে থাকা আর জীবনময়
'যাত্রা'পথে।
গল্পের শুরুতে জানিয়ে দেওয়া হয় নেভাদায় এম্পায়ার শহরে ২০১১ সালে, মার্কিন জিপসাম প্ল্যান্ট ৮৮ বছর পরে বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ছয় মাস পরে, এম্পায়ার একটি ভূতের শহরে পরিণত হয়েছিল এবং জিপ কোডটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। প্ল্যান্টটি বন্ধ হয়ে গেলে, বাসিন্দাদের কাজ সন্ধানের জন্য খালি করতে বাধ্য করা হয়েছিল।
ফার্ন, এই ছবির মূল চরিত্র। যদিও কাল্পনিক চরিত্র, তবুও তার 'যাত্রা' এম্পায়ারের আসল বাসিন্দাদের প্রতিনিধিত্ব করে। তারাও, শহরটিকে তাদের বাড়ি বলে মনে করেছিল এবং এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে সম্ভবত তারা হারিয়ে যাওয়ার অনুভূত হয়েছিল। এম্পায়ারের প্রকৃত বাসিন্দারা ফার্নের মতোই যাযাবর হতে বাধ্য হয়েছিল। ফার্ন যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল তা বাস্তবে নির্মিত। তার 'যাত্রা', তার 'যাযাবর' হয়ে ওঠা এই ছবির মূল বিষয়বস্তু। ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী কয়েকজন হাতে গোনা নাগরিকদের নিয়ে এই মৃত শহরে বাস করে চলেছিল ফার্ন। গত দশকের শেষ মন্দার ছোবল কাটিয়েও টিকে ছিল যে কয়েকজন তাদের মধ্যেই এই পরিবার। স্বামী বো এর মৃত্যুর পরে ফার্ন তার চাকরি হারালে, সে তার জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে ভ্যানের মধ্যে খোলা রাস্তায় 'যাযাবর' জীবন যাপন করার সিদ্ধান্ত নেন। ছবি শুরু হয় এখান থেকেই। এরপর ছবি তার যাত্রাপথ অনুসরণ করে। যাত্রাপথে একটার পর একটা রাজ্য, শহর পার করে ফার্ন আবার একবার শেষে ফিরে আসে এম্পায়ার শহরে। ভিন্ন ভিন্ন শহরে ভিন্ন ভিন্ন অস্থায়ী চাকরী, রাত্রে ফিরে এসে শহরের বাইরে পার্ক করা নিজের ভ্যানে রাতকাটানো, বহু সম-অসম বয়সী বা মনের মানুষের সাথে তার এই সময় কাটানো, বা তাদের সাথেই জীবনের কঠিনতম বাস্তবের মুখোমুখি হওয়া- ক্যামেরা যেন ফার্নকে অনুসরণ করে চলে। এই অবধি শোনার পর মনে হতেই পারে- বাহ! বেশ সুন্দর এক 'রোড-ট্রিপ মুভি' যা বেশ ঘটনাবহুল ও রোমাঞ্চকর। ধাক্কা খেতে হয় ঠিক তখনই যখন পর্দা জুড়ে দেখি ফার্ন তার ভ্যান চালিয়ে রাস্তা পেরিয়ে চলেছে আর মুখ জুড়ে ক্লান্তি আর মুখের প্রতিটা চামড়ার
জটিল ম্যাপ তার অভিজ্ঞতার কথা বলে। ফার্ন এর বয়স যে একষট্টি পার হয়ে গেছে। ফার্ন তার নিঃশব্দের জীবন বেছে নিয়েছিল তার বেঁচে থাকার জন্য। একটার পর একটা শহর পেরিয়ে যায় আর পথের পাশে ফেলে রেখে যায় তার জীবনের বহু মূল্যবান কিছু 'সময়ের অংশ' যা তাকে চালনা করে পরবর্তী সুদূর অচেনার দিকে। পুরোনো ছাত্রীর মা যখন তাকে নিজেদের বাড়িতে থাকতে বলে সেই শহরে কাজের সাথে, সে এক বাক্যে তা নাকচ করে দেয়। ছাত্রীর অবাক হয়ে তাঁকে 'হোমেলেস' কিনা জিজ্ঞাসার উত্তরে সে হাসিমুখে বলে,
"I'm houseless, not homeless"
এতক্ষন আমরা বেশ ফার্নের সাথে এগিয়ে চলেছিলাম তার রাস্তা ধরেই, পথের পাশে ফেলে রেখে যাবতীয় ক্লান্তি, দুঃখ, কষ্ট এই নাগরিক জীবনের। এবার যেন মনে হল, ফিরে দেখা দরকার, কি সেই মানসিক অবস্থান বা কি সেই 'স্পেস' যা ফার্নকে 'হাউসলেস' করলেও 'হোমলেস' করতে পারে নি! আসলে হোমলেস আর হাউসলেস শব্দদুটি আলাদা আলাদাভাবে আমাদের চেতনায় ভিন্ন মাত্রায় কাজ করে যায়। সবার যে এমন হবে, তার কোন কথা নেই। এটা সত্য যে আজ ফার্নের জীবন কাটে একটা ভ্যানে। খাওয়া, রান্না, কাজে যাওয়া থেকে রাত্রে ঘুম-সবটুকুই করে নিতে হয় তাকে খোলা আকাশের নীচে দাঁড় করানো তার ভ্যানে। ঠিকই, আজ তার "বাড়ি/মহল/কুঠী/সদন/ প্রতিষ্ঠান/পুরী/অট্টালিকা"-এর কোনটাই নেই। কিন্তু শুধু এই কারনেই তাকে 'হোমলেস' বলা যায় কি! না, ফার্ন মানে না সে 'হোমলেস'। তার কাছে 'হোমলেস' এক মানসিক অবস্থান যা মানুষ নিজে ঠিক করে তার জন্য। এই পৃথিবীতে সে নিজেকে নিরাধার/ছন্নছাড়া/ নিরাবলম্ব/গৃহহীন/ গৃহহারা/নিরাশ্রয়/অনিকেতন- এর কোনটাই মনে করে না!এই মানসিক 'স্পেস' সে নিজেকে দেয়, যার অনেকখানি জুড়ে আছে তার বেঁচে থাকার যুদ্ধ। নিজের বোনের কাছ থেকে ভ্যান সারাবার প্রয়োজনে কিছু টাকা ধার নিলেও তার আন্তরিক অনুরোধেও সে তাদের বাড়িতে থেকে যায় না। সে মনে করে,
"Home is where the heart is."
রাস্তা, তার ভ্যান, তার রোজকার খুচরো দিন-যাপনের চাকরি, আর দিনের শেষে পাহাড়ী রাস্তার শেষ প্রান্তে ভ্যান থেকে নেমে সহযাত্রী অন্য এক ভ্যানসঙ্গী ডেভিডের সাথে বসে কফি/বিয়ার হাতে সূর্যাস্ত দেখায় তার হৃদয় লুকিয়ে থাকে। সেখানে তার 'হোম'(গৃহ)! তার যাযাবর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সে যেন নতুন করে বাঁচে। সঙ্গী ডেভিড যখন যাযাবর জীবন ছেড়ে ছেলের পরিবারে থাকতে চলে যায়, ফার্ন আবার নতুন শহরের দিকে ভ্যান ঘুরিয়ে নেয়। ডেভিড আর তার ছেলের পরিবারের আমন্ত্রণে সে একদিনের জন্য তাদের বাড়িতে গেলেও তাদের সাথে সে আর একটিও বাড়তি দিন না কাটিয়ে আবার বেরিয়ে পড়ে রাস্তায়। সে জানতো ডেভিড তাকে ভালোবাসে, তাদের পরিবারের সবাই চায় ফার্ন যেন তাদের সাথে থেকে যায়। তাও ফার্ন সেখানে থাকতে অস্বীকার করে কারণ সে জানে ডেভিডের যাযাবর জীবন শেষ হয়ে গেছে। তাই তো বাড়িতে ঢুকেই ফার্ন প্রথম বলে ওঠে যে বাগানে ডেভিডের ভ্যানের টায়ার নষ্ট হয়ে গেছে। যাযাবর জীবনের প্রাথমিক শর্তই যে ডেভিড ভুলে গেছে, তার সাথে ফার্ন থাকবে কি ভাবে! এই কারণেই সে ডেভিড এবং তার পরিবারের সাথে থিতু হতে পারল না, কারণ এটি তার সত্যিকারের চেতনার পক্ষে ক্ষুদ্র।
বো কে হারানোর পর ফার্ন যখন হটকারী হয়েই এই যাযাবর জীবন শুরু করেছিল, সে কিছুতেই ফিরে যেতে পারতো না সেই ঘটনার কাছে, সেই শহরে। রাস্তায় দেখা হয় ববের সাথে। বব কিন্তু বাস্তব চরিত্র। আমেরিকা জুড়ে এই 'ভ্যান-লাইফ' বা যাযাবর জীবনের এক নামকরা মানুষ। তার ইউটিউব চ্যানেল, মানবকল্যাণ ট্রাস্ট দেশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা যাযাবর মানুষের খুবই কাছের। তার সংস্পর্শে কিছু দিন কাটিয়ে ফার্ন বুঝতে পারে আসলে সে এক চরমতম বাস্তব থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সেই 'স্পেস', যা সে এড়িয়ে চলছে। ববের ছেলের মৃত্যুর ঘটনা শুনে এই প্রথম সে নিজেকে দাঁড় করায় বো এর মৃত্যুর সত্যতার সামনে। সে ফিরে যায় এম্পায়ার শহরে, মুখোমুখি দাঁড়ায় এই 'স্পেস' এ, যা সে জাগতিক অর্থে তালা দিয়ে চলে এসেছিল। সামনে দাঁড়িয়ে সে সব বিলিয়ে তবে সে আবার রাস্তায় নামে। আবার নতুন করে যাযাবর জীবনের শুরু করে। তার যাযাবর আত্মা বিদায় জানাতে সুসজ্জিত হয়নি এতোদিন - সে এই প্রথম উপলব্ধি করে।
জীবনের প্রথম সুযোগেই ফার্ন বাড়ি ছেড়ে চলে যায় আর কখনও পিছন ফিরে তাকাতে পারেননি। তার বাড়ি কখনই চার দেয়াল সমন্বিত এক হতে পারে না; এমনকি সে এম্পায়ারে থাকাকালীন, শহরটি আসলে তার বাড়ি ছিল না - তার বাড়ি ছিল বো।
যে 'স্পেস' নিয়ে পরিচালক এই ছবির মূল বিষয়বস্তুকে এক নির্দিষ্ট পথে আমাদের ভাবনাকে চালিত করেছে তা লেফেব্রের (Henri Lefebvre) মতে 'স্থান'টির একটি ‘কংক্রিট অ্যাবস্ট্রাক্ট’ ত্রিপক্ষীয় মডেল যা এই বিভিন্ন অন্যান্য মাত্রা সুসংহত করার জন্য চেষ্টা করে। লেফেব্রের মতে কোনও সামাজিক উত্পাদিত ঐতিহাসিক স্থান দ্বিপক্ষীয়ভাবে অন্তর্নির্মিত ম্যাট্রিক্স যা তিনি 'স্থানিক অনুশীলন', 'স্থানের উপস্থাপনা' এবং 'উপস্থাপনার স্থান' বলে অভিহিত করে, প্রত্যেকটি একটি নির্দিষ্ট ভাবে জোটবদ্ধ যার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি এগুলি হলো 'অনুভূত','কল্পনা'এবং'জীবিত'।
লেফেব্রেয়ের এই 'স্পেস' স্পর্শকাতর যা একটি 'মানসিক স্থানের ধারণার জেনারালাইজেশন' বলে কিছু নির্দিষ্ট অংশে অভিনয় করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হলেও ফার্ন তার 'স্পেস' কে মানসিক ভাবে আগলে রেখেছে, তাতে বাস করেছে, আর তাতেই সে বাকি জীবন কাটানোর নতুন যাত্রা শুরু করেছে।
'নোমাডল্যান্ড' দেখায় যে রাস্তায় ফার্ন সত্যই সবচেয়ে সুখী। সে তার নিকটতম কয়েকজনের সাথে সাক্ষাত করেছেন এবং সীমাহীন সৌন্দর্যের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। যদি এক জায়গায় থাকত তবে সে কখনও এই অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করতে পারতো না। এক ভাবনা যা আমাদের বুঝিয়ে দেয় যে বাড়ি সবার জন্য এক নয়।
ছবির শেষে মৃত বো ও এম্পায়ার থেকে বিদায় নিয়ে ফার্ন শান্তির খোঁজে ফিরে তার স্পেস, তার বাড়িতে - উন্মুক্ত রাস্তায়।
ঝাও (Chloé Zhao ) র এই মহাকাব্যিক ট্রাভেল স্টোরি, যা আমেরিকান ওয়েস্ট নেভাদা থেকে দক্ষিণ ডাকোটা ভ্রমণ করে, দেশের বেশ কয়েকটি নাটকীয় ল্যান্ডস্কেপের সুন্দর ফটোগ্রাফির বর্ণনা দিয়ে চলে। এটি ঝাওয়ের গল্প বলার মতো সহানুভূতিশীল ভঙ্গিমায় প্রবাহিত হয়েছে, এবং পর্দা জুড়ে বড় আকারের নন-এক্টররা নিজেরাই প্রভাব বিস্তার করে চলেছে আর মহামন্দার পরে রাস্তায় বেঁচে থাকার কাহিনী প্রকাশ করেছে। অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকটকে পরিবেশন করে, ঝাও তার ছবিতে 'আমেরিকান ড্রিম' কতটা ভয়াবহ হতে পারে সে সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে।
কিছু তথ্য যা গুগলে পাওয়া যায়:
২০১৭ সালে Jessica Bruder( মহিলা সাংবাদিক) এর লেখা ' Nomadland: Surviving America in the Twenty-First Century ' নামের নন-ফিকশন থেকে নেওয়া গল্প 'Nomadland' নামের ছবিটি র ডিরেক্টর Chloé Zhao (চাইনিজ মহিলা) আর প্রধান চরিত্রে আছে Frances McDormand (মহিলা). ২০২০ সালে ছবিটি মুক্তি পায় এবং ২০২১ সালের Academy Awards এ Best Film Award পায়। বেশ কিছু বাস্তব যাযাবর জীবনের মানুষ এই ছবিটি জুড়ে আছে, যাদের মধ্যে প্রধান Bob Wells.
বাকিটা ব্যক্তিগত:
নয়ের দশকের শেষ দিকে যখন সিনে সোসাইটির সাথে নিয়মিতভাবে যুক্ত ছিলাম তখন প্রায়শই বিভিন্ন দেশের ভিন্ন ভিন্ন ভাষার ভিন্ন ধর্মী ছবি দেখে আমাদের একটা কাজ ছিল তা হলো, ছবি যা আমাকে ভাবতে বাধ্য করতো তা নিয়ে কিছু আলোচনা শোনা বা কাউকে অল্প হলেও একটু জিজ্ঞাসা করে নেওয়া। শহরের এক পরিচিত মুখ যিনি ছিলেন আমাদের এই অজস্র কৌতূহল নিবারক তিনি আমার একবার এই অস্কার পাওয়া কোন ছবি নিয়ে উচ্ছাসকে প্রায় হতোদ্যম করে দিয়ে বলেছিলেন, 'ওটা অস্কার নয়, আস্কারা!' কিরকম দমে গিয়েছিলাম এরকম কথা শুনে। দিনের শেষে চায়ের দোকানে আড্ডা ছেড়ে উঠে যাবার সময় বলেছিলেন, ' যতই আস্কারা বলি না কেন, একবার দেখে নেওয়া উচিত।' যতই হোক আমাদের থেকে একটু হলেও এগিয়ে থাকা মানুষের কাজ। তাই সেদিনের সেই দিন থেকে আজ অবধি প্রচুর বিদেশী ছবি দেখলেও বছরকার অস্কারপ্রাপ্ত ছবি বা অস্কারে মনোনীত হওয়া দু-একটা ছবি দেখে নিই সময়করেই। সে আগের বারের পুরস্কারপ্রাপ্ত 'প্যারাসাইট' হোক বা এবারের পুরস্কার না পাওয়া 'মিনারি' বা 'মাঙ্ক' বা 'দ্য ট্রায়াল অফ শিকাগো সেভেন'। এবারে তাই 'নোমাডল্যান্ড' দেখতে একটুও দেরী করিনি। তথ্য অনুযায়ী আমি গল্পের লেখক, পরিচালক বা প্রোটাগনিষ্টকে আলাদা করে মহিলা উল্লেখ করে আলাদা কোন অর্থ করতে চাইনি। এ শুধু আমার ভালোলাগার বহিঃপ্রকাশ!
.
.
.
*ছবি গুগল থেকে নেওয়া।

Comments

Popular Posts