'বুলবুল' খোঁজে রূপনারায়নের কূলে (এগারো)

'বুলবুল' খোঁজে রূপনারায়নের কূলে (এগারো)

না, না আমরা বুলবুল খুঁজতে এগারো বার রূপনারায়নের পাড়ে যাইনি। তবে কিছু খুঁজতে তো যাই। তাই সংখ্যা আর ঝড়ের নাম বাদ দিলেই আমাদের পুরনো নদীর পাড়ে কাটানো রাত আর তার দীর্ঘ খোঁজ।
তো যে কথা বলছিলাম, বুলবুল খুঁজতে বেরিয়েছিলাম কাল সকালে সকালই। কোথায় খুঁজতে গেলাম? সে জিজ্ঞাসা করে আমাদের লাভ নেই। আমরা তো ঘুরে ফিরে প্রতিবারই একই জায়গায় যাই। নদীর পাড়ে। একটা নয়, দু-দুটো নদীর মিলনমেলায়। রূপনারায়ন এর কূলে। সকাল সকাল উঠেই খবর পেলাম স্কুল ছুটি। তাই বৃষ্টি-ঝড় মাথায় নিয়েই রাস্তায় বেরিয়ে পড়লাম।। ভালোই লাগছিল বৃষ্টি ভেজা জনমানবহীন রাস্তায়। যত মোহনার দিকে এগুই ততই ঝড়-জল বাড়তে থাকে। সেই নিয়েই চললাম। পৌঁছালাম সময় মতোই। নির্দিষ্ট হোটেল, প্রতিবারের মতোই এবারেও। ও হরি! গিয়ে দেখলাম হোটেলে কোন লোক-জন নেই বাইরের। শুধু লাল-লাইট গাড়ী আর ফ্লুরোসেন্ট কমলা ড্রেস পড়া লোকজন আর ওয়াকিটকি হাতে নিয়ে কয়েকজন। চমকে গেলাম। যা বাবা! এতো ভি আই পি তো নই আমরা। ওনারাও আমাদের দেখছেন আর আমরাও ওনাদের। ওনারা বেশ অবাক হচ্ছেন আজকের এরম দিনে আমরা এই জায়গায় বেড়াতে এসেছি। আর ওনারা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম হিসাবে এলাকায় নজরদারি করছেন। গভর্নমেন্টের বড়ো অফিসাররা শুধু আসা যাওয়া করছেন আর বাঁধ পর্যবেক্ষণ করছেন। রাত বাড়তে থাকলো আর ঝড়ের শোঁ শোঁ আওয়াজ বাড়তে থাকলো। অল্প একটু ভয় যে করছিল না তা নয়, তবুও বেশ ভালো লাগছিল। অনেক রাত করে ঝড়ের ফিরে যাওয়ার সাথেই ঘুমিয়েছিলাম। আজ সকালে উঠে আমরাও বেড়িয়ে পরলাম বাঁধ আর নদীর ধারে। না, ক্ষয়-ক্ষতি প্রায় হয়নি। শুধু ইলেকট্রিক তার কিছু ছিঁড়েছে, মেরামত চলছে। গাছ কিছু ভেঙ্গেছে। সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার হয়ে থাকলেও জল-ঝড় আর নেই। আমরাও খাওয়া-দাওয়া করে বাড়ীর দিকে ফিরলাম।
* না, বুলবুল দেখতে বা দেখে আনন্দ নিতে গিয়েছিলাম সেরকম কিছু নয়। আসলে দিনটা ঠিক হয়েই ছিল তাই ভাবলাম ঘুরেই আসি না হয়!
* মিডিয়ার সতর্কবার্তায় মানুষ আজকাল এতো সচেতন যে রাস্তায় একটা গাড়ী বা বাজার দোকানে একটাও লোক দুপুর থেকেই ছিল না। বেশ তাড়াতাড়িই কাল পৌছেছিলাম কাল।
* আচ্ছা, কতবার আমরা এখানে এলাম এখনো পর্যন্ত! দশ বার হয়ে গেছে। কিন্তু ঠিক কতবার মনে নেই। তাই এবার থেকে সংখ্যা মনে রাখার জন্য এগারো লিখলাম।
(৯.১১.১৯-১০.১১.১৯)

Comments

Popular Posts