Trust no Future, howe’er pleasant!
গত রবিবার থেকে আজ শুক্রবার। মাত্র ছ-দিন। বাড়ির বাইরে যায়নি। শেষদিন মানে শনিবারও গিয়েছিলাম স্কুলে। উচ্চ মাধ্যমিক এবং একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা ছিল। এই কদিন খুব সকালেই পৌঁছে যাচ্ছিলাম স্কুলে বোর্ড পরীক্ষার জন্য। প্রায়দিনই নটার আগেই। বেরুতেও প্রায় রোজই সাড়ে পাঁচটা। দুটো পরীক্ষা, তার পরিকল্পনা, খাওয়া, খাতা গোছানো সব মিলিয়ে এক জমজমাট অবস্থা থাকে এই সময়টা। এর মাঝেই চলছিল নিজেদের বোর্ড পরীক্ষার খাতা দেখা, জমা দেওয়া আর পরের বোর্ডের খাতার অপেক্ষা। এরই মাঝে আবার স্কুলের নিজস্ব ইউনিট পরীক্ষার জন্য প্রশ্ন তৈরি করে জমা দেওয়া, সেগুলো ছাপানোর জন্য প্রেসে পাঠানো। আবার মাঝে মাঝে মনে পড়ে যাচ্ছিল যে এই পরীক্ষা শেষ হলেই আমাদের আবার এবছর ভোটের জন্য যেতে হবে। এককথায় এইসময় আমরা সবাই সঙ্গে আমাদের স্কুল ও যেন দৌড়ায়। দম ফেলার সময় প্রায় পাওয়াই যায় না। চাতকের মতো তাকিয়ে থাকতাম কবে গ্রীষ্মের ছুটি পড়বে! যদিও তাতে আবার বাড়িতে থাকতেও বেশ ঝামেলার। কিন্তু কি যে হল! এই দুরন্ত গতি আমাদের এক ঝটকায় থামিয়ে দিতে বাধ্য হলাম। থামতে হল আমাদের। শুধু সব কাজ বন্ধ করে থামা নয়, একেবারে বাড়িতে বসে থামতে হল আমাদের সবাইকে। শনিবার সন্ধ্যায় ফেরার সময়ই ট্রেনেই অনেকেরই আতঙ্কিত মুখ দেখিছি। এক অজানা আতঙ্কে, অজানা যুদ্ধে নিজেদের যেন হারিয়ে দিয়েই আমরা বসে গেছি। না। এরকম নয় কিন্তু। আসলে এই থেমে যাওয়া থেকে পুনরায় গতিশীল হওয়ার লড়াইয়ে ফিরে আসতে আমাদের শুধুই এখন থেমে থাকতে হবে। এই থেমে থাকা যে কি কষ্টের আমার মতো অনেকেই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। প্যাচপ্যাচে গরমে ভীড় ট্রেনে স্কুলে পৌঁছে সারাদিন ক্লাস নেবার পর আবার যখন শেষ বিকালে ফেরার ট্রেন ধরতে স্টেশনে আসতাম, তখন অনেকেরই আমার মনে হত, 'রবিবার কবে যেন!' বা 'এ সপ্তাহে একটাও ছুটি নেই!' আর আজ এই ছদিনেই হাঁপিয়ে উঠেছি। জানি এই ছদিনেই শেষ নয় এই ঘর-বন্দি থাকা, আরো অনেকদিন থাকতে হবে এই ভাবেই। আবার নতুন করে গতিশীল হতে এই যুদ্ধে জিততেই হবে। তাই তো সাময়িক এই থেমে থাকা। এই থেমে থাকারও এক ছন্দ আছে। সেই ছন্দেই থেমে থাকতে হবে না হলে যে গোলমাল হয়ে যাবে সব।
Comments